জাহাজঘাটার শহর

মূলঃ ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা[১৯২৪]
অনুবাদঃ কল্যাণী রমা

জাহাজঘাটার এই শহরটা বড় অদ্ভুত।
ভদ্রঘরের বউরা, মেয়েরা সরাইখানাটায় আসে। যতক্ষণ কোন অতিথি থাকে, ওদের মধ্যে থেকে একজন কেউ রাতটা তার সাথে কাটায়। লোকটার ঘুম ভাঙবার পর থেকে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া, সারাদিনের ঘোরাঘুরি – পুরোটা সময়ই মেয়েটা পাশে পাশে। মধুচন্দ্রিমা কাটাতে আসা নতুন বর বউ-এর মত যেন ওরা।
তবু, লোকটা হোটেলটায় নিয়ে যাওয়ার কথা তুললেই মেয়েটা ঘাড় কাত করে ভাবতে বসে। কাছের গরম ঝরণাটার পাশেই ওই হোটেল। অবশ্য লোকটা শহরে একটা বাড়ি ভাড়া করে থাকতে চাইলে আর মেয়েটার অল্প বয়স হ’লে তখন হয়ত ও খুশী মনেই বলে ওঠে, “আমি তোমার মেয়েমানুষ হয়েই থেকে যাব। তবে খুব বেশি দিনের জন্য না। এই ধর কোনভাবেই বছরখানেক কিংবা মাস ছয়েক না হয় যদি।”

সেদিন সকালে, লোকটা তাড়াহুড়া করে নিজের সব জিনিষপত্র গোছাচ্ছিল। এবার নৌকা ক’রে চলে যাওয়ার সময় হ’ল। মেয়েটা ওকে সাহায্য করতে করতে জিজ্ঞাসা করল, “আচ্ছা, আমার হয়ে একটা চিঠি লিখে দেবে?”
“কি বলছ? এখন?”
“অসুবিধা কি, আমি আর তো তোমার মেয়েমানুষ না। তুমি যতক্ষণ এখানে ছিলে, আমি তোমার কাছে কাছে ছিলাম। বলো, ছিলাম না? কোন খারাপ কিছুই তো করিনি। কিন্তু এখন আর তো তোমার মেয়েমানুষ না আমি। ”
“তাই বুঝি – তাই বুঝি?” লোকটি মেয়েটির হয়ে মানুষটাকে চিঠিটা লিখে দিল। ওই মানুষটাও নিশ্চয়ই ওরই মত মেয়েটির সাথে এই সরাইখানাতেই অর্ধেকটা মাস কাটিয়ে গেছে।
“তুমি আমাকেও এমন চিঠি দেবে তো? কোন এক সকালে, যখন অন্য কেউ নৌকাটা করে চলে যাবে? যখন তুমি আর তার মেয়েমানুষ থাকবে না?”

(লেন ডানলপের-এর ইংরেজী অনুবাদ থেকে)

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ